চাশতের নামাজ পড়ার সময় ও নিয়ম

যখন দ্বিপ্রহর হবে হবে ভাব, সূর্যের তাপের প্রখরতা বেড়ে চলছে, তাপে মুখ পুড়ে যাওয়ার উপক্রম; এ সময়টা হলো চাশতের নামাজের সময়। এ সময়টিতে কাজের অনেক চাপ থাকে, জীবন যাপনের চাহিদা পূরণের শত ব্যস্ততা থাকে।

এ ব্যস্ততা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামেরও ছিলো। তিনি রেসালাতের প্রচুর দায়িত্ব পালন করেছেন। বিভিন্ন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন, সাহাবিদের শিক্ষা প্রদান করেছেন আবার পরিবারের সবার অধিকার আদায়ের ব্যাপারেও সচেতন ছিলেন। এরপরও নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ তাআলার ইবাদত করেছেন, ব্যস্ত এ সময়ে চাশতের নামাজ পড়েছেন। উম্মতকে নিয়মিত এ নামাজটি পড়তে বলেছেন। প্রমাণস্বরূপ হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত মুয়াজাহ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করলেন-

كَمْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي صَلاَةَ الضُّحَى قَالَتْ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ وَيَزِيدُ مَا شَاءَ

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ’যুহা’ বা চাশতের নামাজ কয় রাকাত আদায় করতেন? জবাবে হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন, ‘তিনি ’যুহা’ বা চাশতের নামাজ সাধারণত চার রাকাত আদায় করতেন এবং অনেক সময় ইচ্ছামত আরও বেশি আদায় করতেন।’ (মুসলিম ৭১৯)

নবিজির অসিয়ত

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ নামাজ সম্পর্কে অসিয়তও করে গেছেন। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আমার বন্ধু (অর্থাৎ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তিনটি কাজ করতে উপদেশ দিয়েছেন। সেগুলো হলো-

بِثَلاَثٍ بِصِيَامِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَرَكْعَتَىِ الضُّحَى وَأَنْ أُوتِرَ قَبْلَ أَنْ أَرْقُدَ

প্রতি মাসে তিনটি করে সওম (রোজা) পালন করতে, ‘যুহা’ বা চাশতের দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে এবং ঘুমানোর আগে বিতর নামাজ আদায় করতে।’ (মুসলিম ৭২১)

উল্লেখ্য, হাদিসের ব্যাখ্যায় এসেছে, সালাতুল আওয়াবিন নামে একটি নামাজ পড়ার বিধান ব্যাপকভাবে প্রচলিত রয়েছে। সেই নামাজটিকে পূর্বাহ্নের বা চাশতের নামাজ বলা হয়। এই নামাজের সময় হলো- সূর্য উদয়ের পর নামাজ পড়ার মাকরূহ সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর থেকে সূর্যটি যখন এক বল্লম বা এক বর্শা উপরে উঠে যাবে, তখন থেকে নিয়ে সূর্য আকাশ থেকে হেলে পড়া বা ঢলে যাওয়ার আগ মূহুর্ত পযন্ত। এই নামাজটি পড়া মুস্তাহাব ও একটি উত্তম কর্ম।

চাশতের নামাজের রাকাত সংখ্যা

হাদিসে চার রাকাত এবং আরও বেশি পড়ার কথা এসেছে। হাদিসের ব্যাখ্যায় এই নামাজের রাকাত সংখ্যা হলো- সর্বনিম্ন দুই রাকাত এবং সর্বোত্তম হলো দুই দুই রাকাত করে চার রাকাত। আর সর্বাধিক রাকাত হলো আট রাকাত।

আবার অনেক আলেমের মতে, এই নামাজের রাকাতের অধিক সংখ্যার সীমা নির্ধারিত নেই। অতএব মুসলিম ব্যক্তি তার ইচ্ছা মত যতো রাকাত নামাজ পড়ার ইচ্ছা করবে ততো রাকাত নামাজ পড়তে পারবে। তবে এই নামাজগুলো দুই দুই রাকাত করে পড়তে হবে।

© Copyright 2024 - All Rights Reserved - by Jagobangla