ঘরে বসেই অনলাইন জিডি যেভাবে করবেন, যা লাগবে
থানা পুলিশের চাপ কমানো এবং প্রযুক্তির ছোঁয়ায় পুলিশের সেবাপ্রত্যাশীদের ভোগান্তি কমাতে চালু করা হয় অনলাইন জিডি প্রক্রিয়া। ২০১০ সালেই সারাদেশে প্রতিটি থানায় ইলেকট্রনিক এফআইআর ও জিডি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। তবে সেটি আনুষ্ঠানিক পূর্ণতা পায় ২০২২ সালে।
অনলাইন জিডি যেভাবে করবেন, যা লাগবে
প্রথমে প্লে স্টোর থেকে ONLINE GD নামক সফটওয়্যার ইন্সটল করতে হবে। এরপর নিজের মোবাইল নম্বর এবং মনে রাখার মতো পাসওয়ার্ড দিয়ে বাকি নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। নির্ধারিত ছকের তথ্যগুলো পূরণ করে অনলাইন জিডির তথ্যাদি এন্ট্রি করতে হবে।
এনআইডি তথ্য দিয়ে অভিযোগ এন্ট্রি
নিবন্ধন অপশনে গেলে মিলবে আরও চারটি অপশন। সেখানে আছে জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট ও বিদেশি পাসপোর্ট। তবে আপাতত জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যে নিবন্ধন করা যাচ্ছে।
জাতীয় পরিচয়পত্রের অপশনে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, জন্মতারিখ ও পরিচয়পত্র যাচাই করে ব্যবহারকারীর জেলা, থানা, ইউনিয়ন, গ্রাম ও ঘটনার বিবরণ সংক্রান্ত তথ্যবিবরণী দিতে হবে।
অভিযোগ শেষ হলেই মিলবে সার্ভিস কোড
অনলাইনে জিডি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ব্যবহারকারী পাবেন সার্ভিস কোড। অল্প সময়ের মধ্যে অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইনে কিউ-আর কোড সম্বলিত জিডির কপি সংগ্রহ ও মুদ্রণ করা যাবে। সফটওয়্যার ছাড়াও অনলাইন জিডি করা যাবে GD.POLICE.GOV.BD- এই ঠিকানায়।
২০১৯ সালে শুরু অনলাইন জিডি
অনলাইন জিডির বর্তমান সফটওয়্যারটির নির্মাণ শুরু হয় ২০১৯ সালে। ২০২০ সালের জুন থেকে এর পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হয়। ২০২২ সালের জুনে শুভ উদ্বোধন করা হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট ও আইসিটি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত দুই পদ্ধতিতে করা যাচ্ছে অনলাইন জিডি। একটি ওয়েবসাইট ( GD.POLICE.GOV.BD) থেকে। অপরটি অনলাইন জিডি অ্যাপস (ONLINE GD) থেকে। দুই পদ্ধতিতে এখন পর্যন্ত শুধু হারানো অভিযোগগুলো করা যাচ্ছে।
অনলাইন জিডি অ্যাপসের দেখভালে জড়িত পুলিশ সদর দপ্তরের আইসিটি বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দুই উপায়ে জিডি এন্ট্রি হচ্ছে। আমরা প্রচুর ফিডব্যাক পাচ্ছি। অনেকে নেগেটিভ মন্তব্যও করছেন। ব্যবহারে বিড়ম্বনার নেতিবাচক ফিডব্যাকও আসছে। আমরা সব ধরনের নেতিবাচক ফিডব্যাক ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। অ্যাপসটা ইউজার ফ্রেন্ডলি করার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) ওয়াই এম বেলালুর রহমান জানান, অ্যাপসে অনলাইন জিডি এন্ট্রি করতে সমস্যা হচ্ছে— এমন অভিযোগ আমরা পেয়েছি। যেসব সেবাগ্রহীতা বিড়ম্বনার কথা আমাদের জানিয়েছেন তদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সমস্যা চিহ্নিত হলে সমাধানও আছে। আমরা ইউজার ও সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে আরও ফিডব্যাক আশা করছি। এখন পর্যন্ত যেসব সমস্যার বিষয় আমাদের নজরে এসেছে তা সমাধান করা হচ্ছে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, পুলিশের আধুনিকায়নে যুক্ত হওয়া অনলাইন জিডি কার্যক্রমের সফটওয়্যারটি সিডিএমএস++ সফটওয়্যারের সঙ্গে এপিআই-এর মাধ্যমে সংযুক্ত। ২০১১ সালে সিডিএমএস সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। বর্তমানে এটা বাংলাদেশের সব থানায় দায়ের করা এফআইআর এবং এফআইআর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্যাদির ডিজিটাল রেকর্ড হিসেবে কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষিত হচ্ছে।