চিত্রনায়ক জসিম সম্পর্কে ১১টি অজানা তথ্য
চিত্রনায়ক জসিম উদ্দিন। শুরুটা খল অভিনেতা হিসেবে হলেও পরবর্তীকালে ঢাকাই ছবির নায়ক হয়ে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পান। মূলত তার হাত ধরেই বদলে গিয়েছিলো ঢাকাই সিনেমার চালচিত্র। বহুমাত্রিক উপভোগ্য অ্যাকশন দৃশ্য উপহার দিয়ে তিনি জয় করে নিয়েছিলেন বাংলার মানুষের মন।
ভিলেন হিসেবে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে অ্যাকশন হিরো হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন । ১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে পরলোকগমন করেন তিনি। আসুন এই অভিনেতা সম্পর্কে কয়েকটি অজানা তথ্য জেনে নিই -
১. জসিমের আসল নাম আবুল খায়ের জসিম উদ্দিন।
২. ১৯৭৩ সালে জসিম প্রয়াত জহিরুল হকের 'রংবাজ' (বাংলাদেশের প্রথম অ্যাকশন দৃশ্য যুক্ত করা ছবি) ছবিতে খলনায়ক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন।
৩. একই পরিচালকের পরিচালনায় 'সবুজ সাথী' চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন।
৪. মুক্তিযোদ্ধা জসিম '৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে দুই নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।
৫. দেওয়ান নজরুলের 'দোস্ত দুশমন' ছবির মাধ্যমে জসিম আলোড়ন তোলেন। 'দোস্ত দুশমন' ছবিটি হিন্দি সাড়া জাগানো ফিল্ম 'শোলে' ছবির রিমেক। ছবিটিতে তিনি গব্বারের চরিত্র করেছিলেন। খোদ শোলে ফিল্মের নামকরা চরিত্র গব্বার সিংয়ের আদলে থাকা ভারতীয় খলনায়ক আমজাদ খান পর্যন্ত ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন জসিমের।
৬. স্বাধীনতার পর আধুনিক বাংলা চলচ্চিত্রের এগিয়ে যাওয়ার পেছনে জসিমের অবদান অনস্বীকার্য। কারণ, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অ্যাকশন ধারার প্রবর্তক এবং ‘ফাইটিং গ্রুপ’-এর শুরুটা জসিমের হাত ধরেই হয়েছিল।
৭. জসিমের মৃত্যুর পর এফডিসিতে তাঁর নামে একটি ফ্লোরের নামকরণ করা হয়।
৮. তিনিই একমাত্র নায়ক, যিনি শাবানার সঙ্গে একই সঙ্গে প্রেমিক এবং ভাইরূপে চরিত্রদান করেছিলেন এবং দুটি চরিত্রই দর্শকরা খুব সাদরে গ্রহণ করেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, যে শাবানা 'সারেন্ডার' ছবিতে জসিমের প্রিয়তমা হিসেবে সফল হয়েছেন, সেই শাবানা 'অবদান', 'মাস্তান রাজা'র মতো ছবিতে জসিমের বড় বোন হয়ে সফল হয়েছিলেন।
৯. জসিমই আবিষ্কার করেছিলেন আজকের নায়ক রিয়াজকে। ১৯৯৪ সালে রিয়াজ চাচাতো বোন ববিতার সঙ্গে বিএফডিসিতে ঘুরতে এসে নায়ক জসিমের নজরে পড়েন। জসিম তখন তাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। ১৯৯৫ সালে জসিমের সঙ্গে 'বাংলার নায়ক' নামের একটি ছবিতে অভিনয় করেন রিয়াজ।
১০. জসিমের তিন ছেলে। রাতুল, রাহুল, সামি। যার মধ্যে রাতুল ও সামি 'Owned' ব্যান্ডের বেজিস্ট ও ড্রামার (এই ব্যান্ডদল বর্তমানে অনেক ট্রেন্ডিং ব্যান্ড)। রাহুল 'Trainwreck' ব্যান্ডের গিটারিস্ট (এই ব্যান্ডের ড্রামারই পরে অর্থহীন ব্যান্ডে যোগ দিয়েছেন) আর সামি 'Porahor'-এর ড্রামার।
১১. জসিমের প্রথম স্ত্রী ছিলেন ড্রিমগার্লখ্যাত নায়িকা সুচরিতা। পরে তিনি ঢাকার প্রথম সবাক ছবির নায়িকা পূর্ণিমা সেনগুপ্তার মেয়ে নাসরিনকে বিয়ে করেন।