আইয়ামে বীজ ও এর আমল

আইয়াম হলো আরবি ইয়াওম শব্দের বহুবচন। যার অর্থ হলো দিনগুলো। আর বীজ শব্দের অর্থ সাদা, শুভ্র। আইয়ামে বীজ দ্বারা চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ বোঝানো হয়। এই তারিখগুলোতে জ্যোৎস্নায় রাতগুলো শুভ্র ও আলোকিত হয়। বিশেষত মরুভূমিতে এটি বেশি দৃষ্টিগোচর হয়। এ কারণে তারিখগুলোকে একসঙ্গে বোঝাতে ‘আইয়ামে বীজ’ নামকরণ করা হয়েছে।

রাসুল সা. আইয়ামে বীজে (আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে) রোজা রেখেছেন এবং সাহাবিদের রোজাগুলো রাখতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। হজরত আবু যার রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা বলেন, হে আবু যার! যখন তুমি মাসের মধ্যে তিন দিন রোজা রাখবে; তবে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখবে।’(তিরমিজি, নাসাঈ, মিশকাত)

তবে এই তারিখে রাখা সম্ভব না হলে মাসের যেকোন তারিখে রাখা যাবে। আয়েশা রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাসের যেকোন দিনে তিনটি সিয়াম রাখতেন। (মুসলিম হা/২৮০১; মিশকাত হা/২০৪৬)

প্রত্যেক মাসে ৩টা করে রোজা পালন করলে সারা বছর নফল রোজা পালনের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। আব্দুল্লাহ ইবনে আ’মর ইবনে আ’স (রা.) হতে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রতি মাসে তিনটি করে রোজা পালন, সারা বছর ধরে রোজা পালনের সমান’। (বুখারি শরীফ)

হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহর হুকুম অমান্য করে বেহেশতের নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল ভক্ষণ করার পর তাদের শরীর থেকে জান্নাতের পোশাক খুলে যায় এবং তাদের শরীরের রং কুৎসিত হয়ে যায়। অতঃপর হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহর হুকুমে চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখলে আবার তাদের শরীরের রং পূর্বের ন্যায় উজ্জ্বল হয়ে যায়।

জান্নাতের একটি দরজা রয়েছে। যেটির নাম রাইয়্যান। কিয়ামতের দিন শুধু রোজা পালনকারীরা ওই দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। সেদিন ঘোষণা করা হবে, রোজা পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়িয়ে যাবে ওই দরজা দিয়ে প্রবেশ করার জন্য। তারা প্রবেশ করার পর দরজাটি বন্ধ করে দেয়া হবে। (বুখারি শরীফ)

© Copyright 2024 - All Rights Reserved - by Jagobangla