জুমআর দিন ও রাতের আমল
সূর্য ওঠার উজ্জ্বল দিনগুলোর মধ্যে উত্তম হলো জুমআর দিন। এ দিনে হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়, তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং জান্নাত থেকে বের করা হয়ও এদিনেই। (মুসলিম)
এ দিনে যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওজু করে জুমআর (নামাজের) দিকে যায়, নিরবে খুতবা শোনে, সে এ জুমআ থেকে পরবর্তী জুমআ ছাড়াও আরো অতিরিক্ত ৩ দিনের গোনাহ থেকে মুক্তি পায়। (মুসলিম)
আর যারা এ জুমআর নামাজ পড়া থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখে আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেন এবং তাদেরকে গাফেলদের অন্তর্ভূক্ত করে নেন।’ (মুসলিম)
মনে রাখতে হবে
সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে সেরা দিন যেহেতু জুমআর দিন। হাদিসে এ জুমআর দিন ও রাতের বিশেষ মুহূর্তের ঘোষণা এসেছে। বান্দা এ সময় আল্লাহর কাছে যা প্রার্থনা করে আল্লাহ ওই বান্দাকে তা দান করেন। জুমআর দিন ও রাতের এ সময় সম্পর্কে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল।লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ সময়ের ফজিলত বর্ণনা করে বলেন, ‘নিশ্চয় শুক্রবার একটি প্রহর (সময়) আছে, যে সময় কোনো মুসলিম দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে যে কোনো কল্যাণের দোয়া করবে, আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাকে তা দান করবেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ হাতের দিকে ইশারা করে ওই সময়টি খুবই সংক্ষিপ্ত বলে দেখান।’ (বুখারি ও মুসলিম)
তবে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমআর দিন ও রাতের বিশেষ মুহূর্তটি নির্ধারণ করে দেননি। তবে সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়িগণ এ বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন।
অধিকাংশের মতে, জুমআর দিন সূর্যাস্তের ঠিক পূর্ব মুহূর্তটি দোয়া কবুলের সময়। এ সময়টিতে যদি কোনো ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে নামাজের অপেক্ষায় বসে দোয়ায় মশগুল থাকে তবে আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির দোয়া কবুল করবেন।
অনেকে বলেছেন, ‘জুমআর দিন ইমাম যখন খুতবা প্রদান শুরু করে, সে সময় থেকে জুমআর নামাজের সালাম ফেরানো পর্যন্ত সময়টিতে রয়েছে সে মুহূর্তটি।
প্রিয়নবি জুমআর দিনে তাঁর প্রতি দরূদ প্রেরণের বিশেষ আমলে প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত আওস ইবনে আওস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে উত্তম দিন হলো জুমআর দিন। এদিন তোমরা আমার প্রতি বেশি বেশি দরূদ পাঠাও (পড়)। নিঃসন্দেহে তোমাদের পাঠানো (পঠিত) দরূদ আমার ওপর পেশ করা (পাঠানো) হয়।’ (আবু দাউদ)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমআর দিন ও রাতের বিশেষ মুহূর্ত লাভের প্রিয়নবি নির্দেশিত আমল করার জন্য খুতবা শোনা থেকে শুরু করে মাগরিব পর্যন্ত জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, দরূদ-ইসতেগফার এবং নামাজে কাটানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।