যখন পেঁপে খেলে হতে পারে ক্ষতির কারণ
শরীর সুস্থ রাখতে ভেতর থেকে কাজ করে পেঁপে। এই ফলে থাকা প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ও ফাইবার অনেক অসুখের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। পেঁপে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও কাজ করে। ফলে ছোট-খাটো বিভিন্ন অসুখ সহজে কাবু করতে পারে না।
পেঁপের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। এছাড়াও পেঁপের মধ্যে থাকে ভিটামিন সি, এ, বি, ই, প্রোটিন, আলফা, পিটা, ক্যারোটিন। পেঁপের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ লিউটিন। যা মানব দেহের জন্য খুব ভাল।
পেঁপে খাওয়ার বিপদও আছে। কোন কোন ক্ষেত্রে পেঁপে খাওয়া বিপজ্জনক? জেনে নিন যেসব ক্ষেত্রে পেঁপে খেলে উপকারের বদলে তা হতে পারে ক্ষতির কারণ-
পেঁপের সঙ্গে লেবু খেলে শরীর খারাপ হয়ে যেতে পারে। পেঁপের সঙ্গে অন্যান্য ফল মিশিয়ে যদি খেকে হয় তাহলে তাতে কোনও রকম লেবু বা লেবুর রস দেবেন না। লেবুর সঙ্গে পেঁপে খেলে শরীররে হিমোগ্লোবিন কমে যেতে পারে।
হজমের সমস্যার সমাধানে কাজ করে দই। এছাড়া এই প্রোবায়োটিক খাবার আরও অনেক শারীরিক অসুস্থতার সমাধান দিতে পারে। কিন্তু যখন আপনি উপকারী পেঁপের সঙ্গে দই মিশিয়ে খাবেন, তখন এই দুই উপকারী উপাদান মিলে শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে। দই ও পেঁপে একসঙ্গে খেলে পেটের সমস্যা, বদহজম, বমি কিংবা বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে। তাই একইসঙ্গে পেঁপে ও দই কখনো খাবেন না। স্মুদি তৈরিতে ভুলেও এই দুই উপাদান একসঙ্গে দেবেন না। এর যেকোনো একটি খাওয়ার পর অন্তত চার ঘণ্টা বিরতি দিয়ে অপর খাবারটি খেতে পারেন।
কমলালেবু আর পাকা পেঁপেও শরীরের জন্য একেবারে ভাল নয়। ফ্রুট সালাদে অনেকেই পেঁপে মিশিয়ে দেন। যা শরীরের জন্যেও খারাপ। তাই এই দুই ফল একসঙ্গে সালাদ হিসেবে খাবেন না।
টমেটো এবং পেঁপে এই দুটি খাবার আলাদা আলাদাভাবে স্বাস্থ্যকর হলেও একসঙ্গে জোট বাঁধলেই বাঁধতে পারে বিপত্তি। সালাদের থালায় এই দুইটি অনেক সময় একসঙ্গে শোভা পায়। তবে শারীরিক কোনো অসুস্থতা এড়াতে এই দুইটি জিনিস কখনোই একসঙ্গে খাবেন না।
কিছু মানুষের ক্ষেত্রে পেঁপে শ্বাসকষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ এর একটি উপাদান কারও কারও শরীরে অ্যালার্জির সৃষ্টি করে। তাই যারা শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগেন, তাদের পেঁপে এড়িয়ে চলা উচিত।
ডায়াবেটিসের সমস্যায় যারা ভোগেন, তাদের পেঁপে এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এতে রক্তে শর্করার মাত্রার হঠাৎ পরিবর্তন হতে পারে।
পেঁপে অত্যন্ত পুষ্টিকর হলেও পেঁপের বিচি শেকড় গর্ভপাত ঘটাতে পারে। কাঁচা পেঁপে জরায়ু সংকুচিত করে ফেলে। পাকা পেঁপেতে এই ঝুঁকি কিছুটা কম। তবে গর্ভবতী হলে পেঁপে এড়িয়ে চলাই ভালো।
পেঁপের বিচির নির্যাস পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা কমাতে সক্ষম। বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমাতে এবং শুক্রাণুর নড়াচড়ার ক্ষমতা কমার পেছনেও দায়ী হতে পারে পেঁপে।
পেঁপে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়। তাই যারা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খান তাদের জন্য পেঁপে বিপজ্জনক হতে পারে।
পেঁপেতে থাকে ল্যাটেক্স। যা অ্যালার্জি আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। পেঁপেতে থাকে কাইটিনেস নামক এনজাইম থাকে।
ল্যাটেক্স ও কাইটিনেস এনজাইম একত্রে বিপরীত প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। ফলে হাঁচি, শ্বাসকষ্ট, কাশি ও চোখ দিয়ে পানি পড়ার সমস্যায় ভুগতে পারে। অনেকেই পাকা পেঁপের গন্ধও সহ্য করতে পারে না।
পেঁপেতে ভিটামিন সি আছে। দৈনিক মাত্রার চেয়েও যদি ভিটামিন সি অত্যধিক গ্রহণ করা হয় তাহলে ক্যালসিয়াম অক্সালেট কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে। এমনকি এটি পাথরের আকার বাড়িয়ে তোলে। যা প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হতে পারে না।