বিয়েতে ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার না আনায় তুমুল সংঘর্ষ

গাজীপুরের শ্রীপুরে বিয়ের পর কনে তুলে নেওয়ার অনুষ্ঠানে বর পক্ষ কথামতো ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার না দেওয়ায় উভয় পক্ষের সংঘর্ষে ছয় জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় বর পক্ষ কনে পক্ষের লোকজনদের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ তুলেছে।

শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামে তোতা মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

হামলায় আহতরা হলেন- আলামিন হোসেন, শাহনাজ আক্তার, রফিকুল ইসলাম, আরিফ হোসেনসহ আরও দুজনের। বর পক্ষের লোকজনের দাবি, কনের বাড়ির লোকজন তাদের ওপর এলোপাতাড়ি হামলা চালিয়েছে। ঘরে দরজা বন্ধ করেও পিটিয়েছে। প্রাণে বাঁচতে তারা বরকে নিয়ে পালিয়ে এসেছেন।

কনের বাবা তোতা মিয়ার দাবি, তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের সাঈদ ফকিরের ছেলে রাকিব ফকিরের সঙ্গে মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) তার মেয়ের বিয়ে হয়। বর পোশাক কারখানায় চাকরি করে এবং কনে স্থানীয় মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেছে। বিয়ের পর উভয় পরিবারের সম্মতিতে শুক্রবার কনেকে তুলে নেওয়ার কথা ছিল এবং বর পক্ষ থেকে ৬০ জন মেহমান আসার কথা। তারা ৬০ জনের পরিবর্তে ১২০ জন মেহমান নিয়ে আসে। দুপুরে খাওয়া শেষে একটি ছোট সোনার চেইন নিয়ে বউ সাজাতে ঘরে যায় বরের আত্মীয়-স্বজন।

তিনি দাবি করেন, পরে তাদের কথামতো ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে না আসায় উভয় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে মারামারির শুরু হলে উভয় পক্ষের ছয় জন আহত হন। এ সময় বর পক্ষের সঙ্গে আসা মেহমানরা ঘরের আসবাবপত্রসহ ডেকোরেশনের চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে।

কনের বাবার আরও দাবি করেন, উভয়পক্ষের সম্মতিতে তিন লাখ টাকা দেনমোহরে তিন দিন আগে তাদের বিয়ে হয়। শুক্রবার মেয়েকে তুলে নেওয়ার কথা ছিল বর পক্ষের। ৫০ হাজার টাকা ওয়াসিল দেওয়ার কথা থাকলেও তারা ছোট একটি চেন নিয়ে আসে। বর পক্ষ ইচ্ছে করেই পরিকল্পিতভাবে মেয়ে না নেওয়ার জন্য কথার বরখেলাপ করে ঝগড়া সৃষ্টি করেছে।

বরের বাবা সাঈদ ফকিরের দাবি, তিন দিন আগে পারিবারকিভাবে তার ছেলের সঙ্গে গোসিঙ্গা ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামে তোতা মিয়ার মেয়ের বিয়ে হয়। শুক্রবার আত্মীয়-স্বজনসহ ছেলেকে নিয়ে বউ আনতে গিয়েছিলাম। ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার না নেওয়ায় কনে পক্ষ বউ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। বরের সঙ্গে যাওয়া নরী স্বজনদের হামলা করে আহত করে এবং তাদের পরনে থাকা কানের দুল, নাক ফুল, গলার চেইনসহ সঙ্গে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়। কনে পক্ষের লোকজন মেহমানদের পিটিয়ে আহত করে। তারা কনে না নিয়েই শ্রীপুর এসে বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, প্রায় ঘণ্টাখানেক আগে উভয়পক্ষ থানায় উপস্থিত হয়ে পৃথক অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

© Copyright 2025 - All Rights Reserved - by Jagobangla