বর্তমানে ঢাকায় বসবাসকারী একটি পরিবারকে খাবার খেতে নানা হিসাব-নিকাশ করতে হচ্ছে। অবস্থা এমন যে অনেকে মেন্যু থেকে বাদ দিয়েছেন পুষ্টিকর খাবার। তারপরও হিমশিম খেতে হচ্ছে নগরবাসীকে। কারণ শুধুমাত্র সাধারণ খাবারের জন্য চার সদস্যের পরিবারকে ন্যূনতম মাসিক ৯ হাজার ৫৯ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। আর যদি কোনো পরিবার তাদের খাবারে মাছ-মাংস রাখে তাহলে তো মাসে ২২ হাজার ৪২১ টাকা চলে যাচ্ছে। এটি চলতি বছরের অক্টোবর মাসের হিসাব।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকালে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এ তথ্য প্রকাশ করে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আভাস ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ উত্তরণ কোন পথে?’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে মূল্যস্ফীতির চাপ বোঝাতে ঢাকা শহরে পরিবারের খাবার কেনার খরচ কত বাড়ছে তা জানাতে এসব তথ্য দেয় সিপিডি।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকায় চার সদস্যের একটি পরিবারের অত্যাবশ্যকীয় সব খাদ্যপণ্যসহ সার্বিক খরচ ছিল ১৭ হাজার ৫৩০ টাকা। ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবরের খাদ্যপণ্যের মূল্য বিবেচনায় এ খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে মাসিক ২২ হাজার ৪২১ টাকা।
অন্যদিকে মাছ-মাংস বাদ দিয়ে কম্প্রোমাইজড ডায়েটের হিসাবে চার সদস্যের পরিবারের ন্যূনতম খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫৯ টাকা, যা ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি ছিল ৬ হাজার ৫৪১ টাকা।
খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ওপর আমদানি শুল্কের হার কমানো ও বেসরকারি খাতে মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় বেতন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, পাঁচ শতাংশ বেতন বাড়ালেও যথেষ্ট নয়। ওএমএস কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে। দরিদ্র ও অতিদরিদ্র মানুষদের নগদ অর্থসহায়তা দিতে হবে। জ্বালানির দাম কমানো, অর্থের জন্য কর, জিডিপি বাড়ানোসহ আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছে সিডিপি।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, আন্তর্জাতিক খাদ্য সংস্থা ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন বলছে, দুর্ভিক্ষ আসছে এবং বিষয়টি সত্য। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ সাত ধরনের সংকটে পড়েছে বলে মনে করে সিপিডি। সেগুলো হলো ডলার সংকট, জ্বালানি সংকট, মূল্যস্ফীতি, খাদ্য সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট, কোভিড ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট।