আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দামে বড় ধরনের উত্থান ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ আগামী মাসে সুদের হার কমাতে পারে—এমন জোরালো সম্ভাবনাই এই মূল্যবৃদ্ধিকে উসকে দিয়েছে। একই সঙ্গে রুপার দামেও সৃষ্টি হয়েছে নতুন রেকর্ড।
দি ইকোনমিক টাইমস এর প্রতিবেদন অনুসারে, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে নতুন মাসেও (ডিসেম্বর) মূল্যবান এই ধাতুর দাম বাড়তির দিকেই থাকবে।
শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট গোল্ডের দাম এক শতাংশ বেড়ে দুই সপ্তাহের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। দিনশেষে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১.৩ শতাংশ বেড়ে ৪,২১০.৪৯ ডলারে লেনদেন হয়, যা গত ১৪ নভেম্বরের পর সর্বোচ্চ। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ ধাতুটির সাপ্তাহিক বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৩.৪ শতাংশে।
শুধু স্বর্ণ নয়, রুপার দামও নতুন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। দিনের হিসাবে ৫.৩ শতাংশ এবং মাসের হিসাবে ১৫.২ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স রুপার দাম ৫৬.৪১ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে মূল কারণ হিসেবে কাজ করছে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সম্ভাব্য নীতি পরিবর্তন। কম সুদের পরিবেশে স্বর্ণ সাধারণত একটি আকর্ষণীয় বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয়।
টিডি সিকিউরিটিজের কমোডিটি স্ট্র্যাটেজির গ্লোবাল হেড বার্ট মেলেক বলেন, “আশা করা হচ্ছে যে ২০২৬ সাল নাগাদ অর্থনীতি আরও মন্থর হবে এবং ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে পারে। এতে কিছু বিনিয়োগকারী আবারও স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছে।”
ফেড গভর্নর ক্রিস্টোফার ওয়ালার এবং নিউইয়র্ক ফেড প্রেসিডেন্ট জন উইলিয়ামসের সাম্প্রতিক নমনীয় মন্তব্য এই প্রত্যাশাকে আরও শক্তিশালী করেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ট্রেডাররা এখন ডিসেম্বরে সুদের হার কমার সম্ভাবনা ৮৭ শতাংশ দেখছেন, যা মাত্র এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৫০ শতাংশ।
তবে বিশ্ববাজারে দাম বাড়লেও এশিয়ার প্রধান বাজারগুলোতে স্বর্ণের চাহিদা কিছুটা কম ছিল।
ভারতে বিয়ের মৌসুম শুরু হলেও উচ্চ মূল্য ক্রেতাদের দূরে রাখছে। অন্যদিকে, চীনে স্বর্ণ কেনার ওপর থেকে কর অব্যাহতি সুবিধা তুলে নেওয়ায় ভোক্তাদের আগ্রহ কমেছে।
এদিকে, অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর দামও বেড়েছে। প্লাটিনামের দর সাপ্তাহিক ভিত্তিতে ১০ শতাংশ এবং প্যালাডিয়ামের মূল্য ৬ শতাংশ বৃদ্ধির পথে রয়েছে। ফেব্রুয়ারি ডেলিভারির জন্য মার্কিন স্বর্ণ ফিউচার্সের দাম ১ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স ৪,২৪৫.৭০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।