ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি নামাজ। কোরআনের বিভিন্ন সুরায় মুসলমানদের এই ইবাদতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সুরা বাকারার ৪৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “আর তোমরা নামাজ কায়েম করো এবং যাকাত দাও এবং রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু করো।”
নামাজ কি সব জায়গায় পড়া যায়? কোরআন ও হাদিসের আলোকে বলা যায় সব জায়গায় নামাজ কবুল হয় না। যে সব স্থানে অশুচিতা, অপবিত্রতা বা শিরকের আশঙ্কা থাকে সেসব স্থানে রাসুলুল্লাহ (স.) নামাজ পড়াকে নিষিদ্ধ করেছেন।
নামাজ পড়বেন কোথায়?
নামাজ পড়ার স্থানের বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, “সমগ্র পৃথিবীকে আমার জন্য মসজিদ ও পবিত্র স্থান বানানো হয়েছে। সুতরাং আমার উম্মত যেন যেকোনো স্থানে নামাজের সময় হলে সেখানেই নামাজ পড়ে নেয়,”- (বুখারি: ৪৩৮)।
পৃথিবীর প্রায় যেকোনো স্থান নামাজ আদায়ের জন্য উপযুক্ত যদি তা পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র হয়।
শরিয়তে নিষিদ্ধ নামাজের স্থান
রাসুলুল্লাহ (স.) সাতটি স্থানে নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন।
১. রাস্তা: রাস্তায় নামাজ পড়লে মানুষের চলাচলে সমস্যা হয় ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এতে নামাজির ক্ষতি হতে পারে।
২. ময়লা ফেলার স্থান: যেখানে ময়লা ফেলার স্থান হিসেবে নির্ধারিত সেখানে অপরিচ্ছন্নতা ও নাপাকির আশঙ্কা রয়েছে। এতে নামাজ আদায়কারীর পবিত্রতা নষ্ট হতে পারে।
৩. গোসলখানা: টয়লেট ও গোসলখানায় সাধারণত অপরিচ্ছন্ন থাকে। হাদিসে এমন স্থানে জ্বিনের উপস্থিতির কথাও বলা হয়েছে।
৪. কসাইখানা: রক্ত ও অপবিত্রতার উপস্থিতি: কসাইখানায় সাধারণত রক্ত থাকে। যদি কোনো অংশ সম্পূর্ণ পবিত্র ও পরিষ্কার হয়, তবেই নামাজ পড়া সম্ভব।
৫. কবরস্থান: এখানে শিরক ও কবর পূজার সাদৃশ্য হয়। তবে জানাজার নামাজ কবরস্থানে পড়া যায়। যেমনটি রাসুলুল্লাহ (স.) করেছিলেন- (সহিহ বুখারি: ৪৬০)।
৬. বায়তুল্লাহর ছাদ: কেবলা নির্ধারণে অসুবিধা থাকায় বর্তমানে কাবা শরিফের ছাদে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা নেই।
৭. উটের আস্তাবল: পশুর মল-মূত্র বিশেষ করে উটের আস্তাবল সাধারণত নাপাক থাকে।
বিশেষ পরিস্থিতিতে কী করবেন?
ওই সাত স্থানের বিকল্প পাওয়া না গেলে, জরুরি অবস্থায় নিরাপত্তার কারণে, নামাজের সময় শেষ হওয়ার উপক্রমসহ বিশেষ পরিস্থিতিতে এসব স্থানে নামাজ আদায় করা যেতে পারে। তবে, পরবর্তীত সময়ে অনেক ইসলামিক বিশেষজ্ঞ ওই নামাজ পুনরায় পড়ার পরামর্শ দিয়েছে।
বর্তমানে শপিং মলের পার্কিং লট, কারখানার নির্দিষ্ট অংশ, হাসপাতালের বিশেষ ওয়ার্ড ও গণপরিবহনের নির্দিষ্ট স্থানে নামাজ আদায়ে সতর্কতা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।