শিশু ভয় পেয়ে কাঁদা, অস্থির হয়ে পড়া বা বদনজরে আক্রান্ত হওয়া এ ধরনের বিষয় বহু মুসলিম পরিবারের কাছে পরিচিত। এ সময় অভিভাবকরা আল্লাহর কাছে সুরক্ষা কামনা করে দোয়ার মাধ্যমে সন্তানকে শান্ত করতে চেষ্টা করেন। হাদিসে এসেছে, নবীজী (সা.) শিশুদের ভয়, বদনজর ও শয়তানের ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য কিছু দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন। এসব দোয়া পড়া ও ফুঁ দেওয়ার মাধ্যমে শিশুর জন্য আল্লাহর কাছে নিরাপত্তা প্রার্থনা করা মুস্তাহাব।

শিশু ভয় পেলে পড়ার দোয়া

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ

উচ্চারণ: আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন গাজাবিহি ওয়া শাররি ইবাদিহি ওয়া মিন হামাজাতিশ শায়াতিনি ওয়া আঁইয়াহদুরুন।

অর্থ: আল্লাহর পূর্ণ কলেমাসমূহের মাধ্যমে আশ্রয় চাই আল্লাহর ক্রোধ ও শাস্তি থেকে, তাঁর বান্দাদের অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুমন্ত্রণা ও তাদের উপস্থিতি থেকে।

হাদিসে এসেছে-রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমাদের কেউ ঘুমের মধ্যে ভয় পেলে এ দোয়া পড়বে, এতে শয়তানের কুমন্ত্রণা ক্ষতি করতে পারবে না। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) তাঁর পরিবারবর্গকে এ দোয়া শিক্ষা দিতেন এবং শিশুদের গলায় লিখে ঝুলিয়ে দিতেন। - সুনান আবু দাউদ

বদনজর, জাদু ও শয়তানের ক্ষতি থেকে সুরক্ষায় নিচের এ দোয়াটি নবীজি (সা.) তাঁর দুই নাতি হাসান ও হোসাইনের ওপর পড়তেন। (সহিহ বুখারি)

أُعِيذُكَ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لامَّةٍ

উচ্চারণ: উইজুকা বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইতনিউঁ ওয়া হাম্মাতিউঁ ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মাহ।

অর্থ: আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণীসমূহের ওসিলায় প্রত্যেক শয়তান ও কষ্টদায়ক জন্তু থেকে এবং প্রত্যেক ক্ষতিকর নজর থেকে আল্লাহর কাছে তোমার জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

এছাড়া, সকাল-সন্ধ্যায় সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস তিনবার করে পড়ে শিশুর শরীরে ফুঁ দেওয়ার নির্দেশও এসেছে হাদিসে।

আবদুল্লাহ ইবনে খুবাইব (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, সকাল ও সন্ধ্যায় এ তিন সূরা তিনবার করে পড়লে প্রতিটি ক্ষতিকর জিনিস থেকে নিরাপত্তা পাওয়া যাবে। -সুনানে তিরমিজি, সুনানে আবু দাউদ 

শিশুর নিরাপত্তা, মানসিক প্রশান্তি ও সুরক্ষার জন্য এ দোয়াগুলো পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন নবীজি (সা.)। দোয়া আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনার মাধ্যম; তাই বিশ্বাস ও ভরসা রেখে নিয়মিত এ আমল করা উচিত।