মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশ্বমানবতার জন্য আদর্শ। তিনি নবি ও রাসুল ছিলেন। তিনি পরিবার-পরিজনের সঙ্গে কথা বলেছেন। কেমন ছিল নবি পরিবারের আলাপন? সেসব আলাপন থেকে কিছু তুলে ধরা হলো-
১. হজরত সাফিয়্যা বিনতু হুয়াই রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার কাছে এলেন, হাফসা ও আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে আমার সম্পর্কে কিছু কথা আমার কাছে পৌঁছল। ঐ বিষয়টি আমি তার কাছে উল্লেখ করলাম, তিনি বললেন-
তুমি একথা কেন বললে না যে, তোমরা আমার চেয়ে কীভাবে উত্তম হতে পার? বাস্তব অবস্থা হলো- আমার স্বামী মুহাম্মাদ, পিতা হারুন আর চাচা হলো মুসা আলাইহিস সালাম। হজরত সফিয়্যার কাছে যে কথা পৌঁছেছিল তা এই যে, তারা বলেছিল আমরা তার চেয়ে সম্মানিত, কেননা আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রী আবার তার চাচাত বোন।’ (তিরমিজি ৩৮৯২)
২. হজরত উম্মু সালামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, মক্কা বিজয়ের বছর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফাতিমাহকে ডেকে তার সঙ্গে গোপনে কিছু কথা বললেন। এতে ফাতিমাহ কেঁদে ফেললেন। তারপর তিনি কিছু কথা বললে ফাতিমাহ হাসলেন। উম্মু সালামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আমি ফাতিমাহকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইনতিকালের পরে তার হাসি-কান্নার কারণ জানতে চাই। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে জানান যে, খুব তাড়াতাড়ি তিনি মৃত্যুবরণ করবেন, তাই আমি কেঁদেছি। তারপর তিনি আমাকে জানান যে, মারইয়াম বিনতু ইমরান ছাড়া জান্নাতের নারীদের নেত্রী হব, তাই আমি হেসেছি ‘ (তিরমিজি ৩৮৯৩)
৩. হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, সাফিয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু আনহার কানে পৌঁছে যে, হাফসাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা তাকে ইহুদির মেয়ে বলে ঠাট্টা করেছেন। তাই তিনি কাঁদছিলেন। তার কান্না অবস্থায় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার ঘরে প্রবেশ করেন। তিনি বললেন, ‘তোমাকে কিসে কাঁদাচ্ছে? তিনি বললেন, হাফসাহ আমাকে ইহুদির মেয়ে বলে তিরস্কার করেছেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, অবশ্যই তুমি একজন নবির কন্যা, তোমার চাচা অবশ্যই একজন নবি আর তুমি একজন নবির সহধর্মিণী। অতএব কীভাবে হাফসাহ তোমার উপরে অহংকার করতে পারে? এরপর তিনি বললেন, ‘হে হাফসাহ! আল্লাহ তাআলাকে ভয় কর।’ (তিরমিজি ৩৮৯৪)
৪. হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মাঝে সে-ই ভালো; যে তার পরিবারের কাছে ভালো। আর আমি আমার পরিবারের কাছে তোমাদের চেয়ে উত্তম। আর তোমাদের কোনো সঙ্গী মৃত্যুবরণ করলে তার সমালোচনা পরিত্যাগ করো।’ (তিরমিজি ৩৮৯৫)