১০৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তদন্ত করবে বিগো

জাগো বাংলা ডেস্ক প্রকাশিত: ০৭:৩৭ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২২
১০৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তদন্ত করবে বিগো

চীনভিত্তিক ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ বিগো টেকনোলজির (বিগো) সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অর্থাৎ বিগো অর্থপাচারের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করবে প্রতিষ্ঠানটি। তারা জানায়, বাংলাদেশে সবার জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে যে কোনো অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবো। একই সঙ্গে আমাদের নীতিমালা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে, তা নিশ্চিতে আমরা অভ্যন্তরীণ তদন্ত পরিচালনা করবো।

সোমবার (১০ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বিগো।

এতে বলা হয়, বিগো টেকনোলজির (বিগো) সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ আমাদের নজরে এসেছে। প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে যে অভিযোগ উঠেছে তা আমাদের বিস্মিত করেছে। বিগোর বৈশ্বিক নীতি অনুযায়ী আমরা কঠোরভাবে ও দৃঢ়তার সঙ্গে স্থানীয় আইন মেনে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করি। পাশাপাশি বাংলাদেশের আইন ও বিধির ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে এবং প্রাসঙ্গিক সব আইনি কর্তৃপক্ষকে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবো।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিগো স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও অশ্লীলতাসহ অপ্রাসঙ্গিক কনটেন্ট মডারেশনে আমাদের বাংলাদেশের কর্মীসহ দক্ষ টিম রয়েছে। ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে আইনসম্মত চুক্তির মাধ্যমে বিগো সব অংশীদারের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করে। বাংলাদেশে সবার জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে যে কোনো অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবো। একই সঙ্গে আমাদের নীতিমালা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে, তা নিশ্চিতে আমরা অভ্যন্তরীণ তদন্ত পরিচালনা করবো।

চীনভিত্তিক ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ বিগো টেকনোলজি লিমিটেড। বিগো বাংলা লিমিটেড নামে বাংলাদেশেও এ অ্যাপটি কার্যক্রম শুরু করে। সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও মূলত লাইভ চ্যাট ও ভিডিও চ্যাটভিত্তিক কার্যক্রম চালায় বিগো। অশ্লীলতা ছড়িয়ে এ প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে দেড় বছরে প্রতারণার মাধ্যমে ১০৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর মধ্যে ৭৯ কোটি টাকা সিঙ্গাপুরে পাচার করেছে বিগো।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে। পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে করা একটি মামলার তদন্তে নেমে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্যপ্রমাণ পায় সিআইডি। এরপর বিগো টেকনোলজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) চীনা নাগরিক ইয়াও জিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে আরেকটি মামলা করেছে সিআইডি।

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিগো বাংলা লিমিটেড, বিগো বাংলার কর্মী এস এম নাজমুল হক, আরিফ হোসেন, মুনসুন হোল্ডিং নামের প্রতিষ্ঠান।

সিআইডির করা দ্বিতীয় মামলায় চীন নাগরিক ও বিগোর এমডি ইয়াও জির বিরুদ্ধে ৭৯ কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচারের অভিযোগ করা হয়েছে।

সিআইডি বলছে, পাচারের উদ্দেশ্যে এ অর্থ সংগ্রহে বিগো টেকনোলজিকে সহযোগিতা করেছে মুনসুন হোল্ডিং লিমিটেড। মূলত মুনসুন হোল্ডিংয়ের নামে নেওয়া পেমেন্ট গেটওয়ে ‘সূর্য পে’র সাহায্য নিয়ে বিপুল এ অর্থ আত্মসাৎ করে বিগো টেকনোলজি।

জানা গেছে, বিগো অ্যাপে লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে অশ্লীলতা ছড়ানোর অভিযোগে গত বছরের জুনে চীনা নাগরিক ইয়াও জিসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। পরে তাদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়।

ওই মামলার অন্য চার আসামি হলেন- বিগো বাংলার কর্মী মোস্তাফা সাইফ রেজা, আরিফ হোসেন, এস এম নাজমুল হক ও আসমা উল হুসনা সেজুতী। তারা সবাই এখন কারাগারে