রোববার (১৬ অক্টোবর) থেকে ঢাকায় সৌদি আরবের দূতাবাসে পাসপোর্ট জমা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজ (বায়রা)।
সৌদি আরব মিশনের এক সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে এ ঘোষণা দেয় সংগঠনটি। শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংগঠনের এক জরুরি সভা থেকে এ ঘোষণা দেন বায়রা সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার।
সম্প্রতি সৌদিগামী কর্মীদের পাসপোর্ট গ্রহণ ও ভিসা স্ট্যাম্পিংয়ের দায়িত্ব ‘শাপলা সেন্টার’ নামের একটি বেসরকারি ফার্মকে দিয়েছে সৌদি দূতাবাস। গত ৭ অক্টোবর সৌদি দূতাবাস থেকে জানানো হয়, ১৫ অক্টোবর থেকে রিক্রুটিং এজেন্টের কাছ থেকে সরাসরি কোনো পাসপোর্ট জমা নেওয়া হবে না। শাপলা সেন্টারের মাধ্যমে তা নেওয়া হবে।
বায়রা সভাপতি বাশার বলেন, ‘যদি তারা তাদের সিদ্ধান্ত বাতিল না করে, তাহলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামীকাল (রোববার) থেকে আমরা সৌদি আরব দূতাবাসে কোনো পাসপোর্ট জমা দেব না।’
তিনি বলেন, ‘শাপলা সেন্টার নামক একটি প্রতিষ্ঠান চালু করে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে। এখানে কারো না কারও কিছু উদ্দেশ্য আছে। না হলে সৌদি অ্যাম্বাসির মাথায় এটা ঢুকতে পারে না।সৌদি আরব শুধু বাংলাদেশ থেকে লোক নেয় না, ভারত, ইন্দোনেশিয়া থেকেও লোক নেয়। ভারতে এই একই নিয়ম করতে চেয়েছিল, কিন্তু সব রিক্রুটিং মালিক একসঙ্গে হয়ে তাদের কাছ থেকেই পাসপোর্ট নিতে বাধ্য করেছিল। যদি ভারত পারে, বাংলাদেশ কেন নয়?’
বায়রা সদস্যদের অভিযোগ, ‘এই শাপলা সেন্টার হলো মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের মতো সৌদি আরবের শ্রম বাজারেও সিন্ডিকেট তৈরির একটি অপচেষ্টা। ’
তারা বলছেন, ‘এখন প্রত্যেকটি এজেন্সি কোনো প্রকার ফি ছাড়াই সরাসরি সৌদি দূতাবাসে কর্মীদের পাসপোর্ট জমা দিতে পারে। কিন্তু তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে তা হলে বেসরকারি ফার্ম একটি ফি নেবে, তাতে অভিবাসন খরচ বেড়ে যাবে।’
শাপলা সেন্টারের সঙ্গে বায়রার সহসভাপতি নোমান চৌধুরীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করছেন সংগঠনের সদস্যরা।তবে নোমান তা অস্বীকার করে সভায় বলেন, ‘আপনাদের কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ আছে? আপনারা কি কোনো নথিতে আমার নাম দেখেছেন? আমি গত সপ্তাহে দেশের বাইরে ছিলাম। একটা সাদা কাগজে ২৫-২৬টি নাম ঘুরতেছিল। একটা সাদা কাগজে নাম দেখা মানেই কি আমরা সম্পৃক্ত? আমি কোনোকিছুর সঙ্গে জড়িত না। আমি যদি জড়িত থাকি বা আমার পরিবারের কেউ জড়িত থাকে, আমি রিজাইন করব।’
এ অভিযোগের বিষয়ে বায়রা সভাপতি বাশার বলেন, ‘যদি নোমানের কোনো প্রমাণ পাই বা বায়রার অন্য কোনো সদস্য এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আছে প্রমাণ পাই, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করব।কমিটির কোনো সদস্য জড়িত থাকলে পদত্যাগ করে আপনাদের দরবারে হাজির করে দেব।’