রাস্তায় কিংবা মাঠে ঘাসের ওপর নামাজ পড়া কি জায়েজ?

জাগো বাংলা ডেস্ক প্রকাশিত: ১০:২৫ এএম, ০৩ নভেম্বর ২০২২
রাস্তায় কিংবা মাঠে ঘাসের ওপর নামাজ পড়া কি জায়েজ?

কাজের কারণে অনেক সময় মসজিদে কিংবা বাড়িতে নামাজ পড়া সম্ভব হয় না। মসজিদে কিংবা বাড়িতে গিয়ে নামাজ পড়তে চাইলে নামাজের সময় চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অথবা দেরি করে ফেললে নামাজের সময় চলে যাবে। আশে-পাশে যদি পবিত্র অবকাঠামোও না থাকে তবে কি রাস্তায় কিংবা মাঠে ঘাষের উপরে নামাজ পড়া যাবে? এ সম্পর্কে ইসলামের দিকনির্দেশনাই বা কী?

নামাজের সময় হলে কাছাকাছি নামাজ পড়ার মতো অবকাঠামো না থাকলে রাস্তা-ঘাট ও মাঠে ঘাষের ওপর কিংবা খালি জায়গায় নামাজ পড়া যাবে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমার জন্য জমিনকে নামাজ আদায়ের স্থান ও পবিত্রতা হাসিলের উপায় করা হয়েছে। তাই রাস্তা-ঘাট ও মাঠে নামাজ পড়া যাবে। এ ব্যাপারে ইসলামের দিকনির্দেশনা হলো-

যদি বাহ্যিক নাপাকি না থাকে তাহলে প্রয়োজনে রাস্তায় ঘাসের উপরে নামাজ পড়া নিষেধ নয়। কেননা নির্মিত মসজিদ ছাড়া অন্য স্থানেও নামাজ পড়ার বৈধতা উম্মতে মুহাম্মাদিয়ার জন্য এক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত জাবির ইবনু আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে এমন পাঁচটি বিষয় প্রদান করা হয়েছে, যা আমার আগে কোনো নবিকে দেওয়া হয়নি। (তাহলো)-
১. আমাকে এমন প্রভাব দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে যা একমাসের দূরত্ব পর্যন্ত অনুভূত হয়।
২. وجُعِلَتْ لي الأرْضُ مَسْجِدًا وطَهُورًا، فأيُّما رَجُلٍ مِن أُمَّتي أدْرَكَتْهُ الصَّلَاةُ فَلْيُصَلِّ
‘সমস্ত জমিন আমার জন্য নামাজ আদায়ের স্থান ও পবিত্রতা অর্জনের (তায়াম্মুমের) উপায় করা হয়েছে। কাজেই আমার উম্মতের যে কেউ যেখানে নামাজের ওয়াক্ত হয়, সেখানেই যেন নামাজ আদায় করে নেয়।’
৩. আমার জন্য গানীমাত হালাল করা হয়েছে।
৪. অন্যান্য নবি নিজেদের বিশেষ গোত্রের প্রতি প্রেরিত হতেন আর আমাকে সকল মানবের প্রতি প্রেরণ করা হয়েছে।
৫. আমাকে সার্বজনীন সুপারিশের অধিকার প্রদান করা হয়েছে। (বুখারি ৪৩৮, মুসলিম ৫২১, মুসনাদে আহমাদ ১৪২৬৮)

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দুটি স্থান ছাড়া সারা দুনিয়াই সেজদার স্থান। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
الأرضُ كلُّها مسجدٌ إلا المَقبرَةَ والحمامَ
‘কেবল গোসলখানা ও কবরস্থান ছাড়া সমগ্র জমিনই মাসজিদ (তথা সালাতের স্থান হিসেবে গণ্য)। (আবু দাউদ ৪৯২, তিরমিজি ৩১৭)

তবে সেজদার স্থানটা যদি তুলতুলে নরম হয় তাহলে সেজদা করার সময় কপাল ও নাক ভালোভাবে জমিনে লাগাতে হবে, যাতে শক্ত অনুভব হয়। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
وَإِذَا سَجَدْتَ فَأَمْكِنْ جَبْهَتَكَ مِنَ الأَرْضِ، حَتَّى تَجِدَ حَجْمَ الأَرْضِ
যখন তুমি সেজদা করবে তখন কপাল ভালোভাবে জমিনের সঙ্গে লাগাবে, যাতে করে জমিনের কাঠিন্য অনুভব হয়।’ (মুসনাদে আহমাদ ২৬০৪)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নামাজের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। নামাজের জন্য সমস্ত জমিনকে পবিত্র করে দেওয়ার অনুগ্রহ গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

বিষয়: ধর্ম ইসলাম