বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিছানাপাতি, হান্ডিপাতিল নিয়ে নাকি এক সপ্তাহ আগে মানুষ সম্মেলনে যায়। বরিশালের কীর্তনখোলায় নাকি মানুষের ঢল। এর আগে রংপুরে এক বস্তা উড়াইছেন। দেশের এই সংকটে যখন সাধারণ ও নিম্নআয়ের মানুষ কষ্টে আছে তখন আপনারা টাকা উড়াচ্ছেন। আপনাদের কাছে সাধারণ মানুষের কোনো দাম নেই। বিএনপির দরকার ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন। তাই বিএনপি জনগণকে সরকার পতনের উসকানি দিচ্ছে।’
সোমবার বিকালে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষমতা ফিরে পেতে তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন চলছে। হারানো হাওয়া ভবন ফিরে পেতে আন্দোলন চলছে। রিমোর্ট কন্ট্রোলের মাধ্যমে তারেক রহমান নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারেক রহমান রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। আপনারা বলেন, ঢাকায় মহাসমাবেশে ১০ লাখ লোকের উপস্থিতি হবে। কিন্তু এই ক্ষমতা আপনাদের নেই। শেখ হাসিনা ডাক দিলে বাইরের লোক লাগবে না। শেখ হাসিনার ডাকে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতি হবে ঢাকার অলিগলি থেকে। আমরা লাখ লাখ লোকের জমায়েত করতে পারব।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি ঢাকার রাজপথে অবস্থান নিলে পালানোর পথ পাবে না। বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে পারতো না। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসি রুমে বসে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজনীতি করে। এই দিন দিন না আরও দিন আছে। অপেক্ষা করুন, আন্দোলন কত প্রকার ও কি কি আওয়ামী লীগ তা বুঝিয়ে দেবে। খেলার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। বাঁশের লাঠিতে জাতীয় পতাকা নিয়ে আন্দোলন করতে রাস্তায় নামেন। এরপর জাতীয় পতাকা নিয়ে রাস্তায় নামলে খবর আছে।
তিনি বলেন, খেলা হবে, ডিসেম্বরে খেলা হবে। আন্দোলনের বিরুদ্ধে খেলা হবে। ভোট চোরের বিরুদ্ধে খেলা হবে। ভুয়া ভোটার তালিকার বিরুদ্ধে খেলা হবে। আওয়ামী লীগ প্রস্তুত। উত্তর জনপদে বাঁশের কেল্লা তৈরি করুন। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করেছে জিয়াউর রহমান। তাদের বিচার বন্ধ করতে আইন করেছিলেন জিয়াউর রহমান। খুনিদের বিচার বন্ধ করতে চেয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে খেলা হবে। খুনিদের ক্ষমা করা যায় না। শেখ হাসিনা সরকার সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘব করছে। সেই সরকারের বিরুদ্ধে এরা সাধারণ জনগণকে উসকানি দিচ্ছে।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, শাজাহান খান এমপি, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। বিশেষ বক্তা ছিলেন- প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, সদস্য সানজিদা খানম, সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, ইকবাল হোসেন অপু ও মোহাম্মদ সাঈদ খোকনসহ টাঙ্গাইলের সব আসনের সংসদ সদস্য।
বক্তব্য রাখেন- সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু, সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান, সংসদ সদস্য হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী, সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন, সংসদ সদস্য ছোট মনির, সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ প্রমুখ।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুকের সভাপতিত্বে সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম।
শেষে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বর্তমান সভাপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুককে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলামকে (ভিপি জোয়াহের) আগামী তিন বছরের জন্য এই পদে পুনরায় তাদের নাম ঘোষণা করেন।