প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেকেই রিজার্ভ নিয়ে কথা বলেন। রিজার্ভের কোনো সমস্যা নাই। অনেকে বলেন, ব্যাংকে টাকা নাই। ব্যাংক থেকে টাকা তোলেন। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঘরে রাখলে তো চোরে নিয়ে যাবে। চোরের জন্য সুযোগ করে দেওয়া। কারণ ব্যাংকে টাকা নেই কথাটি ঠিক না।
তিনি বলেন, গতকালও আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মিটিং করেছি। আমাদের এ বিষয়ে কোনো সমস্যা নেই। প্রত্যেকটি ব্যাংকে যথেষ্ট টাকা আছে। আমদের রেমিট্যান্স আসছে। বিদেশ থেকে বিনিয়োগ আসছে। রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের ট্যাক্স কালেকশন বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্য দেশ যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ এখনো যথেষ্ট শক্তিশালী আছে।
বৃহস্পতিবার যশোরের শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সরকার কৃষকের কল্যাণে সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কৃষি উপকরণ কার্ড দিয়েছি। দুই কোটি কৃষক সেই উপকরণ কার্ড পায়। এক কোটি কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে। তাদের টাকা তাদের কাছে চলে যায়। ৯০ টাকায় সার কিনে ১৬-১৭ টাকায় আমরা সার দিচ্ছি।
যশোরে উন্নয়নের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এই যশোর থেকে আমরা যাত্রা শুরু করেছিলাম। এখানে নির্মাণ হয়েছে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, আইটি পার্ক; যেখানে দেড় থেকে দুই হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। যেখানে বিদেশ থেকে অনেক বিনিয়োগ আসছে।
তিনি বলেন, যশোরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছিলাম। খালেদা জিয়া এসে অনেকগুলো বন্ধ করে দেয়। আমরা সেই বিশ্ববিদ্যালয় চালু করেছি। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা সবগুলোর উন্নয়নে কাজ করেছি। সাক্ষরতার হার যেখানে বিএনপির সময়ে ৪৫ ভাগ ছিল, সেটিকে আমরা ৭৫ ভাগে উন্নীত করেছি।
সমাবেশে পদ্মা সেতু ও মধুমতি সেতু হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তনের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। যশোর বিমানবন্দরকে আরও আধুনিকায়ন করা হবে জানিয়ে তিনি যশোর-চট্টগ্রাম নতুন রুট চালু করার কথা বলেন।
অভয়নগরে ইপিজেড করার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে জমি নেওয়া হয়ে গেছে। ৫শ একর জমি আমরা নিয়েছি। সেখানে ৪শ শিল্প প্লট হবে। বহু লোকের কর্মসংস্থান হবে।
তিনি বলেন, ভাঙা-যশোর-বেনাপোল, খুলনা-যশোর-কুষ্টিয়া, যশোর-খুলনা-মংলা এ রাস্তাগুলো সব জাতীয় সড়কে উন্নীত করে দিচ্ছি এবং পদ্মা সেতু থেকে যাতে যশোরে সরাসরি আসতে পারেন। ভাঙা-যশোর রাস্তাও মহাসড়কে উন্নীত হবে। ২০১০ সালে যশোরে একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ৫শ শয্যার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণের প্রাথমিক কাজ এখন চলমান আছে। এটা আমরা নির্মাণ করে দিচ্ছি আপনাদের চিকিৎসাসেবা যাতে ভালো হয়। প্রত্যেকটি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ বেডের ছিল, আমরা তা ৫০ বেডে উন্নীত করে দিয়েছি।
যশোর স্টেডিয়ামকে আরও উন্নয়ন করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রত্যেকটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম করে দিচ্ছি। খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চা করতে হবে। মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে। এটা মানুষের জীবন ধ্বংস করে দেয়। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসে লিপ্ত হওয় যাবে না। এ দেশকে গড়ে তুলতে যুবকদের কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।