ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ কমাতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এজন্য ঋণ অবলোপন নীতিমালায় শিথিলতা আনা হয়েছে। এখন থেকে পাঁচ লাখ টাকার মন্দ মানের খেলাপি ঋণ ব্যাংকগুলো মামলা না করে অবলোপন করে ব্যালান্স শিট বা স্থিতিপত্র থেকে বাদ দিতে পারবে।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন থেকে কৃষি এবং অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্পসহ ক্ষুদ্র অঙ্কের ঋণের মামলার খরচ যদি ঋণের অঙ্কের চেয়ে বেশি হয়; তাহলে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ অবলোপন করতে মামলা করতে হবে না। এত দিন দুই লাখ টাকার ঋণে মামলা না করে অবলোপনের সুযোগ ছিল।
ইসলামী শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোও তাদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এ নীতিমালা অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে যা অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এত দিন দুই লাখ টাকার ঋণ মামলা না করে অবলোপনে সুযোগ ছিল। নতুন নির্দেশনায় ঋণ আদায় না হলেও কাগজ-কলমে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস শেষে ব্যাংক খাতের মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৩৬ হাজার ১৯৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থাৎ চলতি বছরের জুন শেষে এ খাতের মোট বিতরণ করা ঋণ ছিল ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ছিল এক লাখ ২৫ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
অর্থাৎ তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে নয় হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল এক লাখ তিন হাজার ২৭৪ কোটি টাকা যা মোট ঋণের ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এ হিসাবে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩১ হাজার ১২২ কোটি টাকা। তবে, গত বছরের একই সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে খেলাপি ঋণ ৩৩ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা বেড়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ ছিল এক লাখ এক হাজার ১৫০ কোটি টাকা যা মোট ঋণের ৮ দশমিক ১২ শতাংশ।