বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান যে শৌখিন প্রকৃতির মানুষ তা নতুন করে বলার কিছু নেই। সম্পদের দিক থেকেও পিছিয়ে নেই তিনি। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫ হাজার ১০০ কোটি রুপি।
অভিনয়ের পাশাপাশি বলিপাড়ার একাধিক নায়িকা নিজেদের সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে চলেছেন। আনুস্কা শর্মার পোশাক তৈরির সংস্থা ইতোমধ্যেই জনপ্রিয়। বাদ যাননি দীপিকা পাড়ুকোনও। প্রসাধনী সংস্থা খুলেছেন অভিনেত্রী।
‘পাঠান’ ঝড়ের মাঝে শাহরুখ খানের সঙ্গে একটি বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে দীপিকাকে। প্রসাধনী সংস্থার ওই বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে, শাহরুখকে ত্বক পরিচর্যার পাঠ দিচ্ছেন দীপিকা।
‘ক্লিনজিং’ই যে রূপচর্চার প্রথম ধাপ, তাও শিখিয়ে দিয়েছেন দীপিকা। এ যেন রূপচর্চায় শাহরুখের হাতেখড়ি। তবে এর মধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে অভিনেতাকে নিয়ে। সেটি রূপচর্চা বা শাহরুখ-দীপিকার রসায়ন নয়। আলোচনা চলছে একটি ঘড়ি নিয়ে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শাহরুখ বিজ্ঞাপনের ফোটোশুট করার সময় যে ঘড়িটি পরেছিলেন তার মূল্য নাকি আকাশছোঁয়া। তার কব্জিতে যে ঘড়িটি দেখা গেছে তা ‘অডেমার্স পিগুয়েট’ সংস্থার ঘড়ি। গাঢ় নীল রঙের এই ঘড়িটির নাম ‘রয়্যাল ওক ২৬৫৭৯সিএস পারপেচুয়্যাল ক্যালেন্ডার ব্লু সেরামিক’।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, নীল রঙা ঘড়িটির মূল্য ৪ কোটি ৯৮ লাখ। আবার একাংশের দাবি, এই ঘড়িটি শাহরুখ ৪ কোটি ৭৪ লাখ রুপি দিয়ে কিনেছেন।
বলিপাড়ার অধিকাংশের দাবি, ‘পাঠান’ ছবি মুক্তির পর শাহরুখ যে সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, সেখানেও নাকি শাহরুখের হাতে এই ঘড়িটি দেখা গিয়েছিল। তবে কি শাহরুখের প্রিয় জিনিসের তালিকায় ঘড়িটি নতুন সংযোজন?
তবে ঘড়িটি নিয়ে যে নেটব্যবহারকারীদের মধ্যে উন্মাদনার সৃষ্টি হয়েছে তা অস্বীকার করা যায় না। আকাশছোঁয়া দাম শুনে অবাক হয়েছেন অনেকেই। কেউ কেউ দাবি করেছেন, শাহরুখ যে পরিমাণ টাকা দিয়ে ঘড়িটি কিনেছেন, সেই টাকা দিয়ে মুম্বাইয়ের সমুদ্রসৈকতের সামনে একটি ফ্ল্যাট কিনে নেওয়া যাবে।
অনেকের বক্তব্য, সারা জীবন চাকরি করে অবসর নেওয়ার পরেও এত টাকা একসঙ্গে পাওয়া যায় না। তবে, শাহরুখের হাতে যে এমন বহুমূল্য ঘড়ি দেখা যেতেই পারে, তা নিয়ে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।
শাহরুখ যে শৌখিন প্রকৃতির মানুষ, তা ২০০ কোটি রুপি মূল্যের ‘মান্নত’ দেখেই আভাস পাওয়া যায়। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫ হাজার ১০০ কোটি রুপি।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, চার কোটি রুপি মূল্যের একটি মেকআপ ভ্যান রয়েছে শাহরুখের। দিলীপ ছাবারিয়া নামের এক ডিজাইনার এই মেকআপ ভ্যানটি শাহরুখের মনের মতো সাজিয়েছিলেন। ভ্যানটি তৈরি করতে মাস দুয়েক সময় লেগেছিল।
এছাড়াও শাহরুখের সংগ্রহে নামী সংস্থার বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে। বুগাটি ভেরন ব্র্যান্ডের একটি বহুমূল্য গাড়ি রয়েছে তার সংগ্রহে। বিশ্বের দ্রুততম গাড়ির তালিকায় গাড়িটির নাম রয়েছে।
আড়াই সেকেন্ড সময়ের ব্যবধানে বুগাটি ভেরন গাড়িটি শূন্য থেকে প্রতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে পৌঁছতে পারে। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, এই গাড়িটির মূল্য ১২ কোটি রুপি।
বলিউডের হাতেগোনা তারকাদের কাছে রোলস রয়েসের গাড়ি রয়েছে। তারকাদের তালিকায় রয়েছে শাহরুখের নামও। তার কাছে রোলস রয়েসের যে গাড়িটি রয়েছে তা দেখলে মনে হবে, গাড়িটি যেন ওই সংস্থার ফ্যান্টম ড্রপহেড ক্যুপ মডেলের পরিণত রূপ। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এই গাড়িটি কিনতে ৭ কোটি রুপি খরচ হয়েছে অভিনেতার।
শাহরুখের সংগ্রহে একটি বেন্টলে কন্টিনেন্টাল জিটি মডেলের বহুমূল্য গাড়ি রয়েছে। শোনা যায়, এই গাড়িটির মূল্য ৪ কোটি রুপির কাছাকাছি।
মুম্বাইয়ের মান্নতে বেশির ভাগ সময় কাটালেও মাঝেমধ্যেই দুবাইয়ে ছুটি কাটাতে যান শাহরুখ। সেখানেও একটি বাড়ি রয়েছে অভিনেতার। তবে, এই বাড়িটি নিজে কেনেননি শাহরুখ। দুবাইয়ের এক ব্যবসায়ী বাড়িটি উপহার দিয়েছিলেন অভিনেতাকে।
শাহরখের স্ত্রী গৌরী নিজের হাতে দুবাইয়ের ভিলার অন্দরমহলের সাজিয়েছেন। ‘মান্নত’-এর সঙ্গে ছন্দ মিলিয়েই শাহরুখ এই ভিলার নাম রেখেছেন ‘জান্নাত’। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, এই ভিলাটির বাজারমূল্য ভারতীয় মুদ্রায় ১০০ কোটি রুপির কাছাকাছি।
আলিবাগে একটি বাংলোও রয়েছে শাহরুখের। অভিনেতা তার ৫১তম জন্মদিন এখানেই পালন করেছিলেন বলে সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর। সেই সন্ধ্যায় যেন তারকাদের ঢল নেমেছিল শাহরুখের এই বাংলোয়।
আলিবাগের বাংলোটি ১৯ হাজার ৯৬০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে। সমুদ্রসৈকতমুখী এই বাংলোটির মূল্য ১৫ কোটি রুপি। এই বাংলোয় একটি হেলিপ্যাডও রয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর।
আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স দলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা শাহরুখ। সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, এই দলের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ ৬০০ কোটি রুপি।
শাহরুখ ও গৌরীর নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা রয়েছে। এই সংস্থার ভিএফএক্স স্টুডিও রয়েছে। এই সংস্থার বার্ষিক আয় ৫০০ কোটি রুপি।