বিবাহিত জেনেও অনেকে সম্পর্ক চালিয়ে যান। আবার পরে দেখা যায়, সেই সঙ্গীর বিরুদ্ধেই বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়। এমন অভিযোগ বৈধ হতে পারে না বলে জানিয়েছে ভারতের কেরালার হাইকোর্ট। এটাকে প্রেম এবং আবেগের সম্পর্ক বলা যেতে পারে বলে জানিয়েছে আদালত।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি প্রত্যাহারকে অপরাধ বলা যায়। কিন্তু দুজনের সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ক ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারায় ধর্ষণকে প্রতিষ্ঠিত করে না।
২০১০ সালে শ্রীকান্ত শশীধরন নামে এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় কেরালার এক তরুণীর। ২০১৩ সালে তরুণী জানতে পারেন প্রায় ছয় বছর আগে ওই যুবকের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের কথা জেনেও ওই সম্পর্ক থেকে বের হতে চাননি তরুণী। ২০১৯ সাল পর্যন্ত ছিল তাদের সেই সম্পর্ক। তারপর ওই তরুণী প্রতারণা, বিশ্বাসঘাতকতা এবং ধর্ষণের অভিযোগে এফআইআর করেন যুবকের বিরুদ্ধে। তার দাবি, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শ্রীকান্ত। সে তা পালন করেননি। বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। তরুণীর এই দাবির অস্বীকার করে উচ্চ আদালতে যান যুবক। তার বক্তব্য, ওই তরুণীর সঙ্গে ভালোবাসা এবং শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল— এ কথা সত্য। তবে বিয়ের কোনো প্রতিশ্রুতি তিনি দেননি।
তরুণীর জবানের ভিত্তিতে আদালতে পুলিশ জানায়, ওই যুবকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পালন না করার অভিযোগ রয়েছে। তার সঙ্গে অনেক মেয়ের সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এমনকি তরুণী দাবি করেছেন, বিবাহবিচ্ছেদের আশ্বাস দিয়ে বিশ্বাস অর্জন করে শারীরিক সম্পর্ক করতেন যুবক। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে সম্পর্ক চালিয়ে গেছেন তরুণী। এত দিন তিনি এ নিয়ে কোনো অভিযোগ করেননি। হঠাৎ এখন তার অভিযোগের অন্য উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তাছাড়া তরুণী পুলিশকে যে জবান দিয়েছেন সেটাকে সত্য হিসেবে ধরলে বলা যায়, সম্পর্কের বিষয়ে যুবকের গোপনীয় তথ্য জানতেন তরুণী। ফলে প্রশ্ন ওঠে, এরপরও কেন সম্পর্ক চালিয়ে নিয়ে গেলেন তরুণী? এত দিন কি তিনি সমর্থন করেছিলেন?
আদালতের মতে, এ ধরনের দম্পতির মধ্যে যেকোনো সম্পর্ককে শুধু প্রেম এবং আবেগের ফল বা কারণ হিসেবে আখ্যায়িত করা যেতে পারে। এর মধ্যে বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতির যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। ফলে মামলাকারী যুবকের বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগই বাতিল করা হলো। এ মামলায় তার কোনো দোষ দেখছে না আদালত।