ব্রাজিলের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট জেয়ার বোলসোনারোকে হারিয়ে নতুন করে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন লুলা দা সিলভা। এর আগে ২০০৩ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ছিলেন লুলা। কিন্তু ২০১৮ সাল দুর্নীতির দায়ে জেল হলে সেই সময় আর নির্বাচন করতে পারেননি ৭৭ বছর বয়সী সিলভা। সেই নির্বাচনেই প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন বোলসোনারো।
কিন্তু রোববার নতুন করে আবারও প্রেসিডেন্ট হয়ে ক্ষমতায় ফিরেছেন লুলা। ব্রাজিলের ইতিহাসে গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রানঅফ নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তিনি।
লুলা ২০০৩ সালে প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেন। সেগুলোর সুবাদে ব্রাজিলের অসংখ্য গরীব মানুষ দারিদ্রতার হাত থেকে মুক্তি পেয়েছিল। তিনি বলেছেন, এবারো নিজের সেই আগের নীতি নিয়েই আগাবেন তিনি।
লুলা দা সিলভা ব্রাজিলের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আসীন হলেও তার এখানে আসার পথটা মসৃণ ছিল না।
সংবাদ সংস্থা এএফপির তথ্য অনুযায়ী, লুলা নিজে চরম দারিদ্রতার ভেতর বড় হয়েছেন। দক্ষিণ দিকের অঞ্চল পারনামবুকোর একটি অশিক্ষিত কৃষক পরিবারে তার জন্ম হয়েছিল। আট ভাই বোনের মধ্যে সপ্তম ছিলেন তিনি। তার পরিবার একটা সময় অসংখ্য পরিবারের মতো ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে শিল্প শহর সাও পাওলোতে চলে আসে।
লুলা একদম ছোট থাকতে মুচির কাজ করেছেন। তাছাড়া করেছেন বিস্কিট বিক্রি। এরপর ১৪ বছর বয়সে শ্রমিক হিসেবে একটি লোহার কারখানায় যোগ দেন। ১৯৬০ সালের দিকে কারখানায় একটি দুর্ঘটনায় নিজের হাতের আঙ্গুল হারান তিনি।
লুলা দা সিলভা দ্রুত সময়ের মধ্যে তার ট্রেড ইউনিয়নের প্রধান হন এবং ১৯৭০ সালের দিকে তৎকালীন সামরিক স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে বড় ধরনের ধর্মঘটে নেতৃত্ব দেন। ১৯৮০ সালে নিজের ওয়ার্কাস পার্টি গঠন করেন। এর ৯ বছর পর প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
১৯৮৯ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তিনটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যান তিনি। অবশেষে ২০০২ সালের নির্বাচনে সাফল্য পান। এর পরের নির্বাচনেও প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হন তিনি।
লুলা দা সিলভার একবার গলায় ক্যান্সারও হয়েছিল। তার পাঁচজন ছেলে মেয়ে রয়েছে। তার স্ত্রী তিনজন। এর মধ্যে প্রথম দুইজন মারা যাওয়ার পর গত মে মাসে তৃতীয় জনকে বিয়ে করেন তিনি।
সূত্র: এএফপি