ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনী আক্রমণ শুরুর পর থেকে অন্তঃসত্ত্বা রুশ নারীরা সন্তান জন্মদানে আর্জেন্টিনা পাড়ি জমাচ্ছেন। এমন রুশ নারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকায় আর্জেন্টিনার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে।
রুশ নারীদের আর্জেন্টিনায় সন্তান প্রসব করতে চাওয়ার কারণ এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। এতে বলা হয়েছে, আর্জেন্টিনায় জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়। ফলে সন্তানদের আর্জেন্টাইন নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে তারা এমনটি করছেন।
আর্জেন্টিনার অভিবাসন কার্যালয়ের পরিচালক ফ্লোরেন্সিয়া কারিগনানো শুক্রবার বলেছেন, এমন ঘটনাগুলো চিহ্নিত করতে একটি বিচারিক তদন্ত শুরু হয়েছে।
তিনি পুরো প্রক্রিয়াকে একটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে উল্লেখ করছেন। এর মাধ্যমে রুশ অভিভাবকরা আর্জেন্টাইন পাসপোর্ট পাওয়ারও প্রতিশ্রুতি পেয়ে থাকেন।
বৃহস্পতিবার একই ফ্লাইটে ৩৩ জন রুশ নারী বুয়েন্স আইরেস পৌঁছেছেন। তাদের সবাই ৩২ থেকে ৩৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। শুরুতে পাসপোর্ট নিয়ন্ত্রণ থেকে তাদের অনেককেই ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।
ভিন্ন দেশে সন্তান জন্ম দিয়ে দেশটির নাগরিকত্ব অর্জনকে ‘বার্থ টুরিজম’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। এই প্রবণতা নতুন কিছু নয়। যুদ্ধের কারণে পশ্চিমাদের কাছ থেকে রাশিয়া বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং আর্জেন্টিনা যেতে রুশ নাগরিকদের কোনও ভিসা প্রয়োজন হয় না। ফলে সন্তানদের দ্বিতীয় নাগরিকত্ব অর্জনের জন্য রুশদের পছন্দের গন্তব্যে পরিণত হয় বুয়েন্স আইরেস।
কারিগনানো বলেছেন, গত বছর প্রায় সাড়ে দশ হাজার অন্তঃসত্ত্বা নারী লাতিন আমেরিকার দেশটিতে পৌঁছেছেন। এদের মধ্যে ৫ হাজার ৮০০ জন ছিলে শেষ তিন মাসে, অনেকেই বলেছেন তারা ৩৩ তম বা ৩৪ তম সপ্তাহে আছে।
তিনি আরও বলেছেন, ৭ হাজার নারী সন্তান জন্মদানের পর রাশিয়া ফিরে গেছেন। আর্জেন্টিনায় তারা আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছেন শিশু ও শিশুর মা-বাবার নাগরিকত্বের আবেদন করার জন্য।
আর্জেন্টাইন কর্মকর্তা বলেন, সমস্যা হলো তারা আসে, সন্তান জন্ম দেয় এবং আর্জেন্টিনা ছেড়ে যাওয়ার পর আর আসে না। তাদের লজ্জাহীন মিথ্যা বলতে দিতে আমরা পারি না। তারা পর্যটক বলে দাবি করলেও আসলে তারা পর্যটক নন।