দুধ পানের নানাবিধ উপকারিতা রয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, দুধ শরীরের পেশিশক্তি বাড়ায়, হাড় ও দাঁত মজবুত করে। নিয়মিত দুধ পানে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি পায়। দুধে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ তথা ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ও রিবোফ্লেভিনের অপূর্ব সমন্বয়।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন- আর গবাদি পশুর ভিতরে তোমাদের জন্য আছে অবশ্যই শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত। তাদের পেটে যা আছে তাত্থেকে আমি তোমাদেরকে পান করাই (দুধ) আর ওতে তোমাদের জন্য আছে বহুবিধ উপকার। তোমরা তাথেকে খাও (গোশত)। (সূরা মুমিনুন: ২১)
আরেক আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমাদের জন্যে চতুস্পদ জন্তুদের মধ্যে চিন্তা করার অবকাশ রয়েছে। আমি তোমাদেরকে পান করাই তাদের উদরস্থিত বস্তুসমুহের মধ্যে থেকে গোবর ও রক্ত নিঃসৃত দুগ্ধ যা পানকারীদের জন্যে উপাদেয়।’ -(সূরা: নাহল; মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত: ৬৬)
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও দুধ পান করতে পছন্দ করতেন। ইমাম তিরমিযি রহ. এর বর্ণিত একটি হাদিস থেকে জানা যায়, দুধ ছিলো রাসুলুল্লাহ সা. এর সবচেয়ে পছন্দের পানীয়সমূহের একটি। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দুধ ছাড়া অন্য কোনো পানীয়র মধ্যে খাদ্য ও পানীয়ের উপাদান একসাথে পাওয়া যায় না।
বর্ণিত হয়েছে, হজরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম মেরাজের রাতে রাসূলুল্লাহর (সা.) সামনে দুটি পানীয় পেশ করেন। তার একটি দুধ এবং অন্যটি মধু। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামকে যেকোনো একটি গ্রহণের কথা বলেন হজরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম। তখন তিনি পানীয় হিসেবে দুধ গ্রহণ করেন।
রাসুলুল্লাহ সা. কখনোই দুধের হাদিয়া ফেরাতেন না। হাদিসে এসেছে- ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তিনটি বস্তু ফিরিয়ে দেয়া যায় না- বালিশ, সুগন্ধি তেল বা সুগন্ধি দ্রব্য এবং দুধ।’ (তিরমিজি)
নবীজি সা. দুধ পান করার পর একটি বিশেষ দোয়া পাঠ করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, যখন তোমাদের কেউ দুধ পান করে, এই দোয়া পাঠ করবে। তাহলো-
اَللَّهُمَّ بَاركْ لنَا فِيْهِ وَزِدْنَا مِنْهُ
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফিহি ওয়াজিদনা মিনহু।’
অর্থ: হে আল্লাহ! এই খাবারে আমাদের বরকত দিন এবং তা বাড়িয়ে দিন। -(আবু দাউদ: ৩৭৩২)