এমসিসির সুপারিশ শেষ পর্যন্ত প্রয়োগ করতে যাচ্ছে আইসিসি। এখন থেকে বলের ওপর লালা ব্যবহার স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। মূলত আইসিসির ক্রিকেট কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর মঙ্গলবার খেলাটির প্লেয়িং কন্ডিশনে অনেক কিছু বদলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা কার্যকর হতে দেখা যাবে আগামী ১ অক্টোবর। অর্থাৎ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও এই নিয়মে খেলা হবে।
যেসব পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে সেগুলো এমসিসি এই বছরের শুরুর দিকেই সুপারিশ করেছিল। করোনার সময় বলে লালা ব্যবহারের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা ছিল। এখন সেটিকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে লালার ব্যবহারকে অন্যায়ভাবে বলের আকৃতি পরিবর্তনের সমান বলে ধরে নেওয়া হবে।
নতুন নিয়মে এখন আর ম্যানক্যাডিং চেতনাবহির্ভুত হিসেবে ধরা হবে না। অর্থাৎ বোলিংয়ের সময় নন-স্ট্রাইকিংয়ের কেউ যদি ক্রিজ ছেড়ে যান আর বোলার যদি তাকে আউট করে দেন তাহলে সেটি স্বাভাবিক রান আউট হিসেবে বিবেচিত হবে। অর্থাৎ এ ধরনের আউট নিয়ে আর কোনও বিতর্কের অবকাশ থাকছে না। এতদিন ক্রিকেটীয় আইনের ৪১ নম্বর ধারায় বিষয়টিকে আনফেয়ার প্লে বলে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও এখন সেটি ফেয়ার প্লে হিসেবে স্বীকৃত হবে এবং তা ধারা ৩৮ নম্বরে স্থানান্তরিত হবে।
আরও যেসব পরিবর্তন হবে তার মধ্যে হলো ক্যাচ আউট হয়ে কেউ ফিরে গেলে নতুন ব্যাটারকে স্ট্রাইকিং প্রান্তেই দাঁড়াতে হবে। ক্যাচের সময় এতদিন দেখা যেত যে, আউটের আগে কেউ প্রান্ত বদলের সময় একে অপরকে অতিক্রম করে গেলে নতুন ব্যাটার দাঁড়াতো নন স্ট্রাইকে। এখন থেকে নতুন ব্যাটারকে দাঁড়াতে হবে স্ট্রাইকিং প্রান্তেই। অর্থাৎ একে-অপরকে অতিক্রমের বিষয়টি আর বিবেচ্য থাকছে না।
আরও যেসব উল্লেখযোগ্য নিয়ম বদলে যাচ্ছে:
> এতদিন নিয়ম ছিল ডেলিভারির আগে যদি স্ট্রাইকে থাকা কোনও ব্যাটার উইকেট ছেড়ে আসতেন, তাহলে বোলাররা বল ছুড়ে তাকে রান আউট করতে পারতেন। কিন্তু এখন থেকে বোলাররা এভাবে কাউকে রান আউট করতে পারবেন না। এই প্রচেষ্টাকে ডেড বল ধরা হবে।
> এখন থেকে বল খেলার ক্ষেত্রে স্ট্রাইকিং প্রান্তে থাকা ব্যাটারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। অর্থাৎ পিচে ইচ্ছেমতো নড়চড় বা মুভমেন্ট করা যাবে না। এখন থেকে কোনও বল খেলতে হলে পিচের মধ্যেই ব্যাট বা শরীরের একটা অংশ থাকতে হবে। ব্যাটার বল খেলার ক্ষেত্রে পিচ ছেড়ে বের হয়ে আসলে সেটিকে বলা হবে ডেড বল। যে বোলার ব্যাটারকে এমন করতে বাধ্য করবেন, সেই ডেলিভারিকে নো বল কল করা হবে।
> বোলার দৌড় শুরুর পর ফিল্ডিং সাইডের যে কারও অন্যায় কিংবা ইচ্ছাকৃত মুভমেন্ট করা যাবে না। অর্থাৎ ফিল্ডারদের জায়গা পরিবর্তন করা যাবে না। সেটি হলে পেনাল্টি হিসেবে ব্যাটিং দলকে ৫ রান দেওয়ার পাশাপাশি ডেলিভারিটি ডেড বলে ধরা হবে।
> টেস্ট ও ওয়ানডেতে একজন ব্যাটার আউট হলে নতুন ব্যাটার নামার ক্ষেত্রে দুই মিনিট সময় পাবেন। আগে ক্রিজে নামার প্রস্তুতির জন্য তিন মিনিট সময় দেওয়া হতো। টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য ৯০ মিনিট সময়ই থাকছে। এটি পরিবর্তন হয়নি।