মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে কথা না শোনা, নো নেটওয়ার্ক হয়ে যাওয়া, কল কেটে যাওয়া, কল রিসিভ হওয়ার পর কোনও কথা শোনা না যাওয়া ইত্যাদি সব মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতার ঝুঁড়িতে রয়েছে। মোটামুটি অনেকটা অভ্যাসে পরিণেত হয়েছে। বরং কথা বলার সময় কল না কাটাতেই বরং গ্রাহকরা এখন অবাক হয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
টেলিযোগাযোগ খাত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা গেছে, অন্তত চারটি কারণে মোবাইল ফোনে কলড্রপ হয়। এর জন্য শুধু মোবাইল ফোন অপারেটররা দায়ী বা তৃতীয় পক্ষ দায়ী বিষয়টি এমন নয়। কলড্রপের জন্য অনেকগুলো পক্ষই জড়িত। এর মধ্যে চারটি প্রধান কারণ খুঁজে পেয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন মূলত চার কারণে কল ড্রপ হয়ে থাকে। এগুলো হলো-
১. মোবাইল অপারেটরদের নেটওয়ার্কের কারণে। এর মধ্যে রয়েছে নেটওয়ার্কের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা, নেটওয়ার্কের অপ্রতুলতা, বেতার তরঙ্গের (স্পেকট্রাম) স্বল্পতা এবং অ্যান্টেনা ও রেডিওতে ক্যাবলের কানেকশন দুর্বলতা।
২. মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর কারণে কলড্রপ। ব্যবহারকারীর মোবাইল হ্যান্ডসেটে সমস্যা থাকতে পারে। মোবাইলের হঠাৎ ব্যালেন্স শেষ হয়ে যেতে পারে।মোবাইলের ব্যাটারির চার্জ হঠাৎ শেষ হয়ে যেতে পারে। এসব সমস্যার কারণেও মোবাইলে কলড্রপ হয়ে থাকে।
৩. টেলিকম সেবায় যুক্ত অন্যান্য অবকাঠামো সেবাদাতা কোম্পানি যেমন এনটিটিএন’র (ভূগর্ভস্থ ক্যাবল সেবা) ফাইবার কাটা গেলে অথবা মানের অবনতি হলে এবং টাওয়ার কোম্পানির সেবার মানে ঘাটতি থাকলে কলড্রপ হতে পারে।
৪. পরিবেশ এবং প্রতিবেশগত অন্যান্য কারণ। গুরুত্বপূর্ণ স্থান, সরকারি অফিস ও স্থাপনায় সাইট স্থাপনের (টাওয়ার) অনুমতি না পাওয়া, সীমান্ত এলাকায় সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নেটওয়ার্ক সীমিতকরণের কারণে, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনায় অবৈধ জ্যামার ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট ইন্টারফেয়ারেন্স, অনুমোদনহীন রিপিটার, বুস্টার ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট ইন্টারফেয়ারেন্স, শহর এলাকায় নতুন নতুন সুউচ্চ ভবনের কারণে নতুন নতুন প্রতিবন্ধকতা তৈরি হওয়া, ইনডোর বিল্ডিং সলিউশনের (আইবিএস) বসানোর যথাযথ অনুমতি না পাওয়া এবং বাড়িমালিকরা সাইট বা টাওয়ার সরিয়ে ফেলার জন্য ক্রমাগত চাপ দেওয়ায় এবং নতুন সাইটের অনুমোদন না পাওয়ায় সৃষ্ট সমস্যার কারণে মোবাইলে কলড্রপ হতে পারে।
প্রসঙ্গত,আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) স্বীকৃত কলড্রপের হার ৩ শতাংশ বা এর নিচে হতে হবে। সম্প্রতি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি প্রকাশিত এক তথ্যে দেখা গেছে, দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর মধ্যে কলড্রপের হার গ্রামীণফোনের ক্ষেত্রে ০.৫৫, বাংলালিংক ০.৭৬ এবং রবির ১.০৫ শতাংশ।