ইতোমধ্যে বিশ্বের ১১৯তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট বা ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট কার্যক্রমের আওতাভুক্ত হয়েছে। বয়স ও পেশার ভিত্তিতে ই-পাসপোর্টের আবেদনের নিয়মে কিছু পার্থক্য রয়েছে। নবজাতক থেকে অনুর্ধ্ব ৬ বছর এবং তারপর থেকে অনুর্ধ্ব ১৮ বছরের শিশুদের জন্য আবেদনের প্রয়োজনীয় নথিপত্রে সামান্য তারতম্য থাকে। শিশুর জন্য ই-পাসপোর্ট করতে চাইলে জেনে নিন নিয়ম সম্পর্কে।
অনলাইনে আবেদন
অনলাইনে শিশুর পাসপোর্ট আবেদনের আগে শিশুর নাম ব্যবহার করে একটি ইমেইল খুলে নিন। বাবা-মায়ের ইমেইল থাকলে সেটা দিয়ে www.epassport.gov.bd/onboarding- এই ওয়েবসাইটে গিয়ে কিছু তথ্য দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে ভেরিফাই করে নিতে হবে। এরপর অনলাইনে ফরম ফিলাপ করতে হবে। অনলাইনে ফরম ফিলাপ করতে গিয়ে যেকোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে https://www.epassport-bd.com/2022/02/epassport-online-application.html -এই লিংকে গিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
কী কী কাগজপত্র লাগবে?
* অনলাইন ই-পাসপোর্ট আবেদন কপি।
* অনলাইন পাসপোর্ট শিডিউল কপি।
* জন্মনিবন্ধন সনদ।
* বাবা ও মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি।
* নাগরিক সনদ।
* থ্রিআর সাইজের রঙিন ছবি (ব্যাকগ্রাউন্ড হবে ধূসর)
* শিশু, বাবা ও মায়ের এক কপি করে পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
* শিশুর বাবা-মা কেউ সরকারী চাকরিজীবী হলে এনওসি এর কপি
* পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান কপি।
প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য
১। ই-পাসপোর্ট আবেদন ফরম ফিলাপ করার শেষ ধাপে অ্যাপ্লিকেশন সাবমিটেড অপশন, প্রিন্ট সামারি এবং ডাউনলোড অ্যাপ্লিকেশন ফরম অব প্রিন্টিং বাটন পেয়ে যাবেন। এখানে তিন পৃষ্ঠার ই-পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন কপি এবং ১ পৃষ্ঠার অনলাইন পাসপোর্ট শিডিউল পাবেন। এগুলো ডাউনলোড করে নিচে থাকা বারকোডসহ এ ফোর সাইজ কাগজে প্রিন্ট করে নিতে হবে।
২। শিশুর জন্মনিবন্ধন সনদ হতে হবে ডিজিটাল বা ইংরেজি ভার্সনে, যা অনলাইন থেকে ভেরিফাই করা যাবে। https://everify.bdris.gov.bd/ এই লিংকে গিয়ে যাচাই করে দেখতে পারেন জন্মনিবন্ধনের তথ্য পাওয়া যায় কিনা। পাওয়া গেলে সেটি ই-পাসপোর্টের জন্য উপযুক্ত। না থাকলে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করে নিতে হবে।
৩। ই-পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান অনলাইনে সরাসরি বাংলাদেশ সরকারের প্রাপ্তি বাতায়ন ই-চালান ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে। এরপর সেটি পূরণ করে নিকটস্থ যেকোনো সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংকে জমা দেওয়া যাবে। তাছাড়া ব্যাংক এশিয়া, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান নিয়ে থাকে। চালান নেওয়ার পর ব্যাংক থেকে চালানের গ্রাহক কপিসহ একটি জমা রশিদ দেওয়া হবে। নিজে চাইলেও এ চালানের মাধ্যমে মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে অথবা বিকাশ ও রকেট ব্যবহার করে ই-পাসপোর্ট ফি দিতে পারবেন।
৪। ছয় বছরের নিচে শিশুদের জন্য ছবি থেকে ছবি তোলা হয়। সেজন্য ধূসর ব্যাকগ্রাউন্ডে থ্রিআর সাইজের রঙিন ছবি নিয়ে যেতে হবে। ছবিতে শিশুর মাথা যেন সোজা থাকে এবং পরনে রঙিন পোশাক থাকে।
৫। অবশ্যই বাবা-মায়ের নির্ভুল এনআইডি কার্ডের কপি লাগবে। শিশুর জন্মনিবন্ধন সনদে বাবা-মায়ের নামের বানান এবং এনআইডি কার্ডের নামের বানান যেন একই হয়।
৬। অনলাইনে আবেদন ফরম ফিলাপের সময় শিশুর পেশার জায়গায় ‘আদার্স’ সিলেক্ট করবেন।
৭। ১৮ বছরের নিচের শিশুদের জন্য ৫ বছর মেয়াদে ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট দেওয়া হয়।
৮। কাগজপত্র জমা দেওয়ার সময় শিশুর জন্মনিবন্ধন সনদের অরিজিনাল কপি ও শিশুকে অবশ্যই সঙ্গে রাখবেন। বাবা মায়ের এনআইডি কার্ডের আসল কপিও সঙ্গে রাখতে হবে।
৯। ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য কোনও ছবি বা ডকুমেন্ট সত্যায়িত করার প্রয়োজন নেই।
১০। প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র জমা দিতে হবে থানার আওতাধীন পাসপোর্ট অফিসে।